মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২১ অপরাহ্ন
বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: বাহুবলে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের আটকের জের ধরে মহাসড়ক অবরোধের ঘটনায় পুলিশ ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ শতাধিক লোকের নামে মামলা দায়ের করেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার পুটিজুরী তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে রাস্তায় ব্যারিকেড, গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা ও যানবাহনসহ জনগণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ আনেন। এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করে ওইদিনই জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সোমবার অপরাহ্নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ফুটপাতে ব্যবসার জন্য বালু রাখার দায়ে দুই যুবককে আটক করে মোবাইল কোর্টে দুই মাস করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুটিজুরী বাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রমজান আলী ও পুটিজুরী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ মিয়ার পুত্র জসিম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বালু ব্যবসা করে আসছেন। তারা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটপাতাতে বালু রেখে বিক্রি করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। সোমবার বিকালে মহাসড়কের ফুটপাতে বালু রাখার দায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক-এর নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট বালু ব্যবসায়ী রমজান আলী ও জসিম মিয়া আটক করে। পরবর্তীতে তাদের বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর আওতায় ২ মাস করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন পুটিজুরী বাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন আটকে দেয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে অবরোধকালীদের ছাত্রভঙ্গ করে। এ সময় পুলিশ কয়েক ব্যক্তিকে আটক করে। মঙ্গলবার এ ঘটনার প্রেক্ষিতে দায়েরকৃত মামলায় উপজেলার আব্দানারায়ন গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার পুত্র সাইফুর রহমান আজাদ (৩৮), আহাম্মদপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের পুত্র জসিম উদ্দিন (৩০), নোয়াঐ গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে ফজল মিয়া (৪০) ও মীরেরপাড়া গ্রামের আমীন আলী পুত্র ইউছুফ আলী (২১) গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টিতে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ-১১-৯৫৬০) জব্দ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, গ্রেফতারকৃতদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতরে অভিযান চলছে।
এদিকে, সোমবার দিনের বিভিন্ন সময়ে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক-এর নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পৃথক অভিযানে ৬ বালু ব্যবসায়ীকে ২ মাস করে কারাদন্ড, ৩ বালু ব্যবসায়ীকে অর্থদন্ড এবং মোটরযান অধ্যাদেশের আওতায় ১০টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা হক বলেন, বালু-মাটি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। এগুলো বিনা অনুমতিতে উত্তোলন, পরিবহন ও সংরক্ষণ বেআইনী। অবাদে বালু ও মাটি পাচারকারীদের কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।